'আমি ভয় পাচ্ছিলাম কেউ আমাকে চিনে ফেলে কি না'

‘আমি ভয় পাচ্ছিলাম কেউ আমাকে চিনে ফেলে কি না’

‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্ত হওয়ার দিনটির ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন ব্যারিস্টার আরমান। সেই সময়ের ঘটনাগুলো স্মরণ করতে গিয়ে তিনি বলেন,

“হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলাম, কিন্তু ভয় আমার পিছু ছাড়ছিল না। আশঙ্কা ছিল— কেউ যদি আমাকে চিনে ফেলে! বিশেষ করে তৎকালীন সরকারপক্ষের কেউ। সেই ভয়ে আমি গামছা দিয়ে মুখ ঢেকে বসেছিলাম।”

তিনি জানান, “অনেকক্ষণ বসে থাকার পর দেখি হাসপাতালের স্টাফরা আসা-যাওয়া করছে। সাহস করে গার্ডের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম, কিন্তু তারা আমাকে চিনতে পারেনি। তাই ভেতরে ঢোকাও সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে আবার বসে থাকলাম মেইন গেট খোলার অপেক্ষায়। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো পরিচিত কাউকে পাইনি।”

আরমান বলেন, “অবশেষে যখন রোগীদের জন্য প্রধান ফটকটি খোলা হলো, তখন সুযোগ বুঝে আমি ভিতরে ঢুকে পড়ি। কিন্তু মনে তখন চলছিল প্রচণ্ড অস্থিরতা— আমার পরিবার কোথায়, তারা কেমন আছে, আদৌ বেঁচে আছে কি না— এসব চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল।”

“এর কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন ইবনে সিনার পিআর অফিসার আশরাফ সাহেব। তিনি আমাকে তার কক্ষে নিয়ে যান, যদিও প্রথমে তিনি আমাকে চিনতে পারেননি,” বলেন আরমান।

তিনি আরও যোগ করেন, “আমি তখন তার স্মার্টফোনটা নিয়ে গুগলে গিয়ে নিজের নাম সার্চ দিই। সঙ্গে সঙ্গে আমার ছবিটা স্ক্রিনে ভেসে ওঠে। ছবিটা দেখিয়ে আমি আশরাফ ভাইকে জিজ্ঞেস করি, চিনতে পারছেন কি না। তখনই তিনি আমাকে চিনে ফেলেন এবং আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।”

আরমান জানান, সেই সময়ই আশরাফ সাহেবের কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারেন যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। “আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না,” বলেন তিনি। “সবকিছু যেন স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *